মোঃ ফারুক হোসেন, নওগাঁ: পরকীয়ার অভিযোগে প্রেমিক যুগলকে আপত্তিকর অবস্থায় হাতেনাতে আটক করেছে স্থানীয়রা।
শনিবার (১৫ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টায় তাদের দুইজনকে আটক করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
আটককৃত ব্যক্তি নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভাতসাইল গ্রামের মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে সাদেকুর রহমান সাদেক (৫০)। আর ওই মহিলা একই ইউনিয়নের তেজাপাড়া গ্রামের মৃত আজগর আলীর মেয়ে ও ৪, ৫, ৬ নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার মনোয়ারা বেগম মিনির ননদ মজিদা বেগম (৪৮)।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সদর ইউনিয়নের তেজাপাড়া গ্রামে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ভাতসাইল গ্রামের মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে সাদেকুর রহমান সাদেকের তেজাপাড়া গ্রামের মজিদা বেগমের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক চলছিল। দীর্ঘ দিন ধরে রাতের বেলা যাতায়াত করতো সাদেক। এ সম্পর্কের জেরে সাদেক শনিবার রাতে গোপনে ওই মহিলার ঘরে যায়।
বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয়রা প্রেমিক সাদেক ও প্রেমিকা মজিদাকে আপত্তিকর অবস্থায় ওই ঘরের মধ্যেই আটক করে রাখে। রাতেই এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে মহিলা মেম্বার আপোষ মীমাংসার চেষ্টা করে।
মহিলা মেম্বার মনোয়ারা বেগম মিনি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিষয়টি প্রথমে ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে স্থানীয়দের তোপের মুখে প্রেমিক সাদেকের ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে সাদা কাগজে মুচলেকা নিয়ে সাদেককে ছেড়ে দেন। আর বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন মহিলা মেম্বার মিনি।
স্থানীয় আনোয়ার হোসেনসহ বেশ কয়েকজন বলেন, মজিদা বেগমের সঙ্গে পরকীয়ার জেরে অনৈতিক কর্মকান্ড করার সময় এলাকাবাসী তাদের দুজনকে আটক করেন। পরে মহিলা মেম্বার মনোয়ারা বেগম মিনি এসে তাদের দুজনকেই আটক অবস্থা থেকে মুক্ত করে সাদেকের ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে সাদা কাগজে মুচলেকা নিয়ে সাদেককে ছেড়ে দেন।
স্থানীয়রা বলেন, মজিদা ও সাদেক দুজনে মিলে অবৈধ সম্পর্ক করে আসছে। এই অনৈতিক ঘটনা ধামা চাপা দিতে মহিলা মেম্বারকে সার্বিক সহযোগিতা করেন মৃত ঈমান আলীর ছেলে আবুল হোসেন, তার স্ত্রী জুলেখা বেগম ও তার ছেলে আশিক হোসেন। ঘটনাটি ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে দফা রফা করা হয়েছে। এসব অসামাজিক কর্মকান্ডের জন্য গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বিবাহ যোগ্য ছেলে-মেয়েদেরকে বিয়ে দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। তাই আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
ঘটনার পর থেকে সাদেক ও মজিদা আত্মগোপনে থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
খবর পেয়ে পরদিন সকালে তথ্য সংগ্রহ করতে সংবাদ কর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে আবুল হোসেনের স্ত্রী জুলেখা বেগম ও ছেলে আশিক হোসেন সাংবাদিকদের উপর চড়াও হন এবং ভিডিও ধারণ করতে গেলে আবুল হোসেনের স্ত্রী সাংবাদিক মুজাহিদ হোসেনের মোবাইল ফোন ছুঁড়ে ফেলে দেন।
এ ব্যাপারে মহিলা মেম্বার মনোয়ারা বেগম মিনি বলেন, বিষয়টি আমাদের পারিবারিক, তাই পারিবারিকভাবেই সমাধান করা হয়েছে। ২০ হাজার টাকায় দফা রফা করার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন ধরনের কথা বলবে ব্যাপারটা সে রকম কিছু নয়। বিষয়টি নিয়ে নিউজ না করার জন্য এই প্রতিবেদককে অনুরোধ করেন তিনি।
বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ মুহা. আতিয়ার রহমান বলেন, এবিষয়ে কেউ কোনও অভিযোগ করেন নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।